আসাদুজ্জামান রিপন: চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্র আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ সাকিব। পাঁচ বন্ধু মিলে ছুটির দিনে বইমেলায় এসেছেন বই কিনতে। এক স্টল থেকে অন্য স্টলে ঘুরে ঘুরে দেখছেন বই। পছন্দের বই কিনে ঘরে ফিরতে যেন উন্মুখ হয়ে আছে সে। শীতের সন্ধ্যার এই ছুটির দিনে সাকিবের মতো এমন অসংখ্য বইপ্রেমী ভিড় করেছেন প্রিয় লেখকের বই কিনতে।
শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামতেই চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেসিয়াম প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা গেছে এমন সব চিত্র।
সরেজমিনে গিয়ে মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, হিমেল হাওয়ায় স্টল বাতির আলোতে জমে উঠেছে চট্টগ্রামের সিটি করপোরেশন (চসিক) আয়োজিত প্রাণের একুশে বই মেলা। গত দুইদিন তেমন একটা জমে না উঠলেও ছুটির দিনে বই মেলা প্রাঙ্গণ মুখরিত হয়ে উঠেছে লেখক-পাঠকদের পদচারণায়।
আব্দুল আল মাহমুদ সাকিব বলেন, ‘দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং সমসাময়িক বিশ্লেষণ নিয়ে লেখা বইগুলো পড়তে ভালো লাগে। আজ আমরা পাঁচ বন্ধু এসেছি মেলায়।’
এসময় এ প্রতিবেদকের কথা হয় মধ্যবয়সী ফরিদা বেগমের সাথে। যিনি প্রতিবছরের ন্যায় এবারও এসেছেন ছোট মেয়ে মাইশাকে নিয়ে। ঘুরেঘুরে দেখছেন বই।
তিনি বলেন, ‘সাহিত্যের প্রতি আগ্রহের জায়গা থেকে পরবর্তী প্রজন্মের মাঝে সাহিত্যের জয়গান ছড়িয়ে দিতেই মেয়েকে নিয়ে বইমেলায় আসা। মেয়ের জন্য দু'টো শিশু সাহিত্যের বইও কিনেছি।’
‘ইতিহাসের খসড়া’ স্টলের সামনে কথা হয় বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত গবেষক, লেখক ‘ইতিহাসের খসড়া’ সম্পাদক মুহাম্মদ শামসুল হকের সাথে। তিনি নিউজনাউকে বলেন, আজকে ছুটির দিনে অনেক পাঠক-দর্শনার্থী মেলায় আসছেন। তবে বই বিক্রি হচ্ছে কম। পাঠকরা এখনও অবজারভেশন করছেন। সামনের দিনগুলোতে বিক্রি বাড়বে বলেও আশা এ লেখক ও গবেষকের।
মুহাম্মদ শামসুল হক জানান, এবার তার একটি বই বের হচ্ছে। ভোরের কাগজ প্রকাশন থেকে ‘বৃহত্তর চট্টগ্রামে অসহযোগ আন্দোলনের রক্তঝড়া দিনগুলি’। যেটির প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুব এষ।
অন্যদিনের তুলনায় আজ বইয়ের বিক্রি বেড়েছে জানিয়ে অক্ষরবৃত্ত প্রকাশনীর এক বিক্রয় প্রতিনিধি নিউজনাউকে বলেন, ‚অন্যদিনের তুলনায় আজকে বই বিক্রি ভালো। মেলায় দর্শনার্থীদের ভিড় দিন দিন বেড়ে চলছে। আশা করি সামনে আরও ভালো বিকিকিনি জমজমাট হবে।’
কালধারা প্রকাশনীর বিক্রয় প্রতিনিধি মো. নিরব জানান, ছুটির দিন হওয়ায় ক্রেতার থেকে দর্শনার্থীর সংখ্যা বেশি।মানুষ আসছে বই দেখছে, তেমন বিক্রি নেই। সকাল থেকে মাত্র দুই হাজার টাকার বই বিক্রি হল।
মেলা ঘুরে দেখা যায়, এবারের বইমেলায়, গল্প, উপন্যাস এবং কবিতার বইয়ের চাহিদা বেশি।
উল্লেখ্য, প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা ও ছুটির দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে এবারের বইমেলা। চট্টগ্রামের বইমেলায় স্টলের সংখ্যা এবার বেড়ে হয়েছে ১৪০টি। আগেরবার ছিল ১২০টি। ঢাকা ও চট্টগ্রামের মিলিয়ে মোট ১০৮টি প্রকাশনা সংস্থা এবারের মেলায় অংশ নিচ্ছে।
নিউজনাউ/এআর/আরএইচআর/ ২০২৩