alo
ঢাকা, বুধবার, মার্চ ২২, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ৮ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

দেশে বাড়ছে আত্মহত্যা, আট মাসে ৩৬৪ শিক্ষার্থীর মৃত্যু

প্রকাশিত: ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ০৩:৪২ পিএম

দেশে বাড়ছে আত্মহত্যা, আট মাসে ৩৬৪ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
alo


নিউজনাউ ডেস্ক: দেশে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে আত্মহনন। চলতি বছরের আট মাসের (জানুয়ারি থেকে আগস্ট) ৩৬৪ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন, যাদের মধ্যে ১৯৪ জনই ছিল স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থী। আর কলেজপড়ুয়া ৭৬ জন এবং ৫০ জন ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। ৪৪ জন মাদ্রাসায় পড়ুয়া শিক্ষার্থী। এরমধ্যে প্রেমঘটিত কারণে আত্মহত্যার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা বেশি আত্মহত্যা করছে। 

শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) ‘বেড়েই চলেছে শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার হার: আমাদের উদ্বিগ্ন হওয়া কতটা জরুরি?’ শীর্ষক রাজধানীতে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে আঁচল ফাউন্ডেশনের সমীক্ষায় এ তথ্য উঠে এসেছে।

দেশের প্রায় দেড়শো জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকা এবং অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে এ সমীক্ষা তৈরি করা হয়েছে।

সমীক্ষার তথ্য অনুসারে, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট মাসের মধ্যে ৩৬৪ জন শিক্ষার্থী আত্মহননের পথ বেছে নেন। এরমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, স্কুল, মাদরাসা, নার্সিং প্রভৃতি বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার্থী রয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৯৪ জনই স্কুল শিক্ষার্থী। এ তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন কলেজ শিক্ষার্থীরা, যাদের মধ্যে গত আট মাসে আত্মহত্যা করেছেন ৭৬ জন। এসময়ে ৫০ জন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আর ৪৪ জন মাদরাসা শিক্ষার্থী আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।

সমীক্ষায় বলা হয়, আত্মহত্যাকারী ৫০ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর মধ্যে ছেলে ৬০ শতাংশ এবং মেয়ে শিক্ষার্থী ৪০ শতাংশ, কলেজপড়ুয়া ৭৬ জনের মধ্যে ৪৬ দশমিক ০৫ শতাংশ ছেড়ে এবং ৫৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ মেয়ে শিক্ষার্থী, সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ ১৯৪ জন স্কুলগামী শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩২ দশমিক ৯৯ শতাংশ ছেড়ে এবং ৬৭ দশমিক ০১ শতাংশ মেয়ে শিক্ষার্থী এবং ৪৪ জন মাদরাসা শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩৯ দশমিক ২৯ শতাংশ ছেলে এবং ৬০ দশমিক ৭১ শতাংশ মেয়ে শিক্ষার্থী রয়েছেন।

আট মাসের অঞ্চলভিত্তিক বিশ্লেষণে সমীক্ষায় জানানো হয়েছে, শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার প্রবণতার তালিকায় শীর্ষে রয়েছে রাজধানী ঢাকা। আট মাসে আত্মহত্যাকারী ৩৬৪ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে শতকরা ২৫ দশমিক ২৭ শতাংশ ঢাকা বিভাগে, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৬ দশমিক ৪৮ শতাংশ, রাজশাহী বিভাগে ১৪ দশমিক ০১ শতাংশ, খুলনা বিভাগে ১৪ দশমিক ০১ শতাংশ, বরিশাল বিভাগে ৯ দশমিক ৬২ শতাংশ, রংপুর বিভাগে ৮ দশমিক ৭৮ শতাংশ, ময়মনসিংহ বিভাগে ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ এবং সিলেট বিভাগে তুলনামূলকভাবে কম ৪ শতাংশ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন।

এরমধ্যে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থী ৫৩ দশমিক ৩০ শতাংশ, কলেজ শিক্ষার্থী ২০ দশমিক ৮৮ শতাংশ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ১৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ এবং ১২ দশমিক ০৯ শতাংশ মাদরাসা শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন।

সমীক্ষায় আরও দেখা যায়, আত্মহত্যায় এবারও এগিয়ে আছে মেয়ে শিক্ষার্থীরা, যা মোট আত্মহননকারীদের ৬০ দশমিক ৭১ শতাংশ বা ৩৬৪ জনের মধ্যে ২২১ জন। অন্যদিকে ছেলে শিক্ষার্থী রয়েছেন ৩৯ দশমিক ২৯ শতাংশ বা ১৪৩ জন।

সমীক্ষা থেকে প্রাপ্ত ফলাফলে জানা যায়, ১৩ থেকে ২০ বছর বয়সীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। যা ৭৮ দশমিক ৬ শতাংশ। ২১ থেকে ২৬ বছর বয়সীদের মধ্যে ১৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ, ১৩ বছরের কম বয়সী অর্থাৎ ৬ থেকে ১২ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৭ দশমিক ৯৭ শতাংশ (২৯ জন) আর সবচেয়ে বেশি ১৪ থেকে ১৬ বছর বয়সী (১৬০ জন) শিক্ষার্থীরা আত্মহত্যা করেছেন। সবচেয়ে কম ৭ বছর বয়সী এক শিশুও আত্মহত্যা করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, নারায়ণগঞ্জ জেলার এডিসি (শিক্ষা ও আইসিটি ডিভিশন) আজিজুল হক মামুন এবং আঁচল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তানসেন রোজ প্রমুখ।

নিউজনাউ/আরবি/২০২২

X