alo
ঢাকা, শুক্রবার, মার্চ ৩১, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

‘সর্বজনীন অংশগ্রহণমূলক’ নিরাপত্তায় হবে এবারে দুর্গাপূজা: সিএমপি কমিশনার

প্রকাশিত: ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ০৮:১৪ পিএম

‘সর্বজনীন অংশগ্রহণমূলক’ নিরাপত্তায় হবে এবারে দুর্গাপূজা: সিএমপি কমিশনার
alo

 

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় বলেছেন, দুর্গাপূজায় গত বছর যে সমস্যা হয়েছে, সেটি নিরসনে আমরা বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছি। এটা আমাদের জন্য এক ধরনের অভিজ্ঞতা। অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা পরিকল্পনা করি।

চট্টগ্রামে এবারের পূজা ‘সর্বজনীন অংশগ্রহণমূলক’ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় হবে জানিয়ে তিনি  বলেন, 'পূজা যেমন সর্বজনীন, নিরাপত্তা ব্যবস্থাও হবে সর্বজনীন। সকল স্তরের লোকজনকে নিয়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটি করা হবে। যেখানে পূজা কমিটির বাইরেও সমাজের অন্যান্য স্তরের লোকজনেরও অংশগ্রহণ থাকবে।'

বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) বেলা বারোটায় সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়ের সাথে সরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও পূজা উদযাপন পরিষদের নেতাদের মতবিনিময় সভা হয়। পরে সংবাদ সম্মেলনে সিএমপি কমিশনার এসব কথা বলেন।এসময় সফলভাবে পূজা উদযাপনের জন্য সিএমপির পক্ষ থেকে ৩২ দফা নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

এ বছরের দুর্গাপূজায় কোনো ধরনের ‘নেতিবাচক’ গোয়েন্দা তথ্য নেই বলেও জানান কৃষ্ণপদ রায়। 

তিনি বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দিতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ। আর পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে ইন্টারনেট গতির স্লো করার বিষয়ে যে দাবি করা হয়েছে সে বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

এসময় পুলিশ কমিশনার বলেন, নিরাপত্তার জন্য সাদা পোশাকে পুলিশ নিয়োগের পাশাপাশি চার স্তরের নিরাপত্তা থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

নির্দেশনায় বলা হয়— মন্দির বা পূজামন্ডপে যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য বজায় রেখে অনুষ্ঠান কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। অহেতুক কোন প্রকার থিম, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বা ডিজে পার্টি আয়োজন করা যাবে না বলে জানিয়েছে সিএমপি।

অন্যান্য নির্দেশনার মধ্যে আছে, মন্ডপের প্রবেশমুখে ভীড় নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া,পুরুষ ও মহিলাদের জন্য  রাখতে হবে পৃথক প্রবেশ ও বের হবার ব্যবস্থা, মণ্ডপের প্রবেশমুখে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা, সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও ভিডিও ফুটেজ রেকর্ড করার নির্দেশনা দিয়েছে সিএমপি।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, মণ্ডপের চারদিকে বা উপরের অংশ রাখতে হবে উন্মুক্ত , থাকতে হবে প্যান্ডেলের আশপাশে নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা, জরুরি সেবার ফোন ও মোবাইল নম্বর সংরক্ষণ, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের জরুরি সেবার নম্বরগুলো দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শনের ব্যবস্থা থাকতে হবে। বিদ্যুতের বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে জেনারেটর প্রস্তুত রাখতে হবে। বিদ্যুতের ত্রুটিপূর্ণ সংযোগ দ্রুত মেরামত করতে হবে। সার্বক্ষণিক একজন ইলেকট্রিশিয়ান নিয়োগ করতে হবে। নিরাপদ স্থানে পূজামণ্ডপ স্থাপনের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। মণ্ডপসমূহে অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা রাখা। যেমন- ফায়ার এক্সটিংগুইসার, পানি, বালি ইত্যাদি। 

এছাড়া নামাজ ও আজানের সময় সাউন্ড সিস্টেম বন্ধ রাখতে হবে, প্রতিমা পরিবহনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট থানার অফিসার ইনচার্জের সাথে সমন্বয় করতে হবে, অজ্ঞানপার্টি ও মলমপার্টি থেকে দর্শনার্থীদের সর্তক থাকতেও বলা হয়েছে।

পূজামন্ডপে স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন ক্ষেত্রে দেওয়া হয়েছে বিশেষ নির্দেশনা। পূজামন্ডপে আগত নারী দর্শনার্থীরা যাতে ইভটিজিং বা কোন ধরনের হয়রানির শিকার না হয় সে ব্যাপারে  নিতে হবে জরুরি পদক্ষেপ, মোতায়েন করতে হবে নারী ও পুরুষ স্বেচ্ছাসেবক, স্বেচ্ছাসেবকদের চেনার সুবিধার্থে গেঞ্জি/ক্যাপ/আর্মডব্যান্ড ব্যবহার করতে হবে ও স্বেচ্ছাসেবকদের নামের তালিকা সংশ্লিষ্ট থানার অফিসার ইনচার্জের কাছে দিতে হবে। 

তাছাড়া মন্ডপে মদ ও অন্যান্য মাদকদ্রব্য গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে,  মন্ডপের আশপাশে মেলা/জুয়ার আসর বসানো যাবে না, ফুটানো যাবে না কোন আতশবাজি ও পটকা, কোন ধরণের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা বা গুজবের ঘটনা ঘটলে আগে নিকটস্থ পুলিশকে জানাতে হবে। 

প্রতীমা বিসর্জন সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে, সতর্ক থাকতে বিসর্জনের শোভাযাত্রায় যাতে অনাকাঙ্ক্ষিত লোক প্রবেশ না করে। তাছাড়া বিসর্জনের আগে পূজামন্ডপে তালিকা সংশ্লিষ্ট থানায় ও সিটিএসবি’তে প্রদান করতে হবে।

চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি আশীষ ভট্টাচার্যসহ মতবিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত কমিশনার (প্রশাসন ও অর্থ) এম এ মাসুদ, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) আ স ম মাহতাবউদ্দিন, পূজা কমিটি এবং বিভিন্ন সেবা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রতিনিধিরা।

নিউজনাউ/পিপিএন/২০২২

X