নিউজনাউ ডেস্ক: পিঠে বড়সড় চামড়ার ব্যাগ নিয়ে হেলেদুলে হেঁটে যাচ্ছে ছোট ছোট শিশুরা। স্কুল খোলা দিনগুলোতে জাপানে এটি রোজকার দৃশ্য। দেশটিতে প্রাইমারি স্কুলের শিশুদের বই আনা-নেওয়ার জন্য এ ধরনের ব্যাগ ব্যবহারের রীতি বহু বছরের। তবে সেটিই যেন আজকালকার শিশুদের কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, এই ব্যাগের ওজন এত বেশি যে কাঁধে ও পিঠে ব্যথা হয়ে যায়।
জাপানে শিশুদের ব্যবহৃত এই ব্যাকপ্যাকগুলো র্যান্ডোসেরু নামে পরিচিত। টোকিওভিত্তিক কোম্পানি ফুটমার্কের সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, দেশটিতে র্যান্ডোসেরু ব্যবহারকারী ৬ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে ৯০ শতাংশের বেশি বলেছে, তাদের কাছে ব্যাগের ওজন একটি সমস্যা।
প্রায় ১ হাজার ২০০ জন বাবা-মা এবং তাদের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় গ্রেডে পড়ুয়া সন্তানদের ওপর এই জরিপ চালায় ফুটমার্ক। ফলাফলে দেখা গেছে, ৯৩ শতাংশ শিক্ষার্থী এবং ৯০ শতাংশ অভিভাবক মনে করেন, র্যান্ডোসেরুর ওজন অনেক বেশি।
ওজন সমস্যার জন্য স্থানীয় কিছু শিক্ষা কর্তৃপক্ষ শিশুদের বইগুলো শ্রেণিকক্ষে রেখে যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছে, বিশেষ করে গরমের দিনগুলোতে। যদিও এতে শিক্ষার্থীরা হোমওয়ার্ক করতে নিরুৎসাহিত হবে বলে উদ্বেগ রয়েছে।
ব্যাগগুলো মূলত শিশুদের হেঁটে স্কুলে যাওয়া-আসায় উত্সাহিত করার জন্য চালু করা হয়েছিল। কিন্তু সেগুলোর স্থায়িত্ব এবং প্রশস্ত আকারের জন্য মূল্য চুকাতে হচ্ছে। ফুটমার্কের ইয়োমিউরি শিমবুনের মতে, বই এবং অন্যান্য সরঞ্জামে ভরা র্যান্ডোসেরুর গড় ওজন ২০২২ সালে ছিল ৩ দশমিক ৯৭ কেজি। কিন্তু এখন তা বেড়ে ৪ দশমিক ২৮ কেজি হয়েছে। কিছু শিশুর ব্যাকপ্যাকের ওজন ১০ কেজিরও বেশি হয়ে থাকে।
এছাড়া, অভিভাবকরা ব্যাগটির চড়া দাম নিয়েও অভিযোগ করেছেন। র্যান্ডোসেরু কোগিওকাই শিল্প সমিতির তথ্য বলছে, ২০২২ সালে ব্যাগগুলোর গড় দাম ছিল ৫৬ হাজার ৪২৫ ইয়েন (৪৫ হাজার ৭৬৪ টাকা প্রায়)। গত এক দশকে এর দাম বেড়েছে প্রায় ২০ হাজার ইয়েন (১৬ হাজার টাকার বেশি)।
অতীতে জাপানের পদাতিক সৈন্যরা র্যান্ডোসেরু ব্যবহার করতেন। ১৮০০’র দশকের শেষের দিকে স্কুলশিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রথমবারের মতো এর ব্যবহার শুরু হয়। নরম ও শক্ত চামড়ার সংমিশ্রণে তৈরি র্যান্ডোসেরুর এখনকার সংস্করণগুলো বিভিন্ন রঙে পাওয়া যায়। তবে মেয়েদের কাছে লাল এবং ছেলেদের কাছে কালো রঙের ব্যাগগুলোই সবচেয়ে জনপ্রিয়।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
নিউজনাউ/এফএস/২০২৩