alo
ঢাকা, বুধবার, মার্চ ২২, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ৭ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

আদানির সাথে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ কেনাবেচায় ভারতের ‘সম্পর্ক নেই’

প্রকাশিত: ০৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩, ০৭:১৬ পিএম

আদানির সাথে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ কেনাবেচায় ভারতের ‘সম্পর্ক নেই’
alo

 

নিউজনাউ ডেস্ক: ভারতীয় জায়ান্ট আদানি গ্রুপের অঙ্গসংস্থা আদানি পাওয়ারের সাথে কয়েক বছর আগে সই হয়েছিল বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি। তবে সেই চুক্তি এখন সংশোধন করতে চায় বাংলাদেশ। বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ এখন মনে করছে, চুক্তিতে গৌতম আদানির কোম্পানি কয়লার দাম অনেক বেশি উল্লেখ করেছে। এ নিয়ে তৎপর হয়েছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)। তবে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বাংলাদেশের সাথে আদানি গোষ্ঠীর বিদ্যুৎ কেনাবেচার সাথে ভারত সরকারের সম্পর্ক নেই। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়েরও কিছু জানা নেই। খবর ভারতীয় প্রভাবশালী গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার।

শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) খবরটিতে বলা হয়েছে, ঝাড়খণ্ডের গোড্ডায় নির্মিত ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ আমদানির জন্য ২০১৭ সালে আদানি পাওয়ারের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয় বিপিডিবি।

চুক্তি অনুযায়ী, বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে ব্যবহৃত কয়লার দাম পরিশোধ করবে বাংলাদেশ। তবে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ এখন মনে করছে, চুক্তিতে গৌতম আদানির কোম্পানি কয়লার দাম অনেক বেশি উল্লেখ করেছে।

বাংলাদেশি এক কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে খবরে বলা হয়েছে, আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে কয়লার উল্লেখিত দাম (প্রতি মেট্রিক টন ৪০০ মার্কিন ডলার) অত্যাধিক। এটি প্রতি মেট্রিক টন ২৫০ ডলারের নিচে হওয়া উচিত, যেমনটি আমরা আমাদের অন্য তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে আমদানি করা কয়লার জন্য দিচ্ছি। আমরা চুক্তি পুনর্বিবেচনার জন্য ভারতীয় কোম্পানিটির সাথে যোগাযোগ করেছি

এদিকে, গত বৃহস্পতিবার নয়া দিল্লিতে মন্ত্রণালয়টির মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি সাংবাদিকদের বলেছেন, আদানি পাওয়ার-বাংলাদেশের মধ্যকার ওই চুক্তির সাথে ভারত সরকারের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই এবং চুক্তি নিয়ে সাম্প্রতিক সমস্যাগুলো ভারত-বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে কোনো প্রভাব ফেলবে না।

অরিন্দম বাগচি বলেন, আদানি গোষ্ঠীকে নিয়ে যে বিতর্ক দেখা দিয়েছে, তা জি–২০ গোষ্ঠীর সম্মেলনের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে বলে তিনি মনে করেন না।

ভারতের ঝাড়খন্ডের গোড্ডা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ে আদানি গোষ্ঠীর চুক্তি হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী ইউনিটপ্রতি নির্ধারিত দাম কমানোর জন্য বাংলাদেশ সরকার অনুরোধ জানিয়েছে বলে সে দেশের কোনো কোনো গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অরিন্দম বাগচি বলেন
, এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের কিছু জানা নেই। চুক্তিটি এক সার্বভৌম সরকারের সাথে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের। ওই চুক্তির সাথে ভারত সরকার জড়িত নয় বলেই তার ধারণা।

অরিন্দম বাগচি আরও বলেন, ‘প্রতিবেশী প্রথম নীতি’ অনুযায়ী ভারত তার প্রতিবেশীদের সাথে ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সম্পর্ক ও যোগাযোগ স্থাপনে আগ্রহী, যা উন্নয়নের জন্য সহায়ক।

তিনি বলেন, ভারত চায় তার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফল প্রতিবেশীদেরও সমৃদ্ধ করুক। দুই দেশের মধ্যে সব ধরনের যোগাযোগ, বিদ্যুৎ ও জলসম্পদ ক্ষেত্রে এত সহযোগিতার লক্ষ্যও তা।

আদানি বিতর্ক নিয়ে একাধিক প্রশ্ন ওঠে। ওই গোষ্ঠীকে নিয়ে সাম্প্রতিক বিতর্কের দরুণ বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্য দেশের সাথে সম্পর্ক ও দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না, ওঠে সেই প্রশ্নও। জানতে চাওয়া হয়, আসন্ন জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের ওপর এ বিতর্ক ছায়া ফেলবে কি না। এ বিষয়ে অরিন্দম বাগচি বলেন, অর্থনৈতিক কারণে কোনো বিশেষ প্রকল্প সুষ্ঠুভাবে হতে না পারা দুই দেশের সম্পর্কের প্রতিফলন হিসেবে গ্রাহ্য হতে পারে না। ব্যবসাবাণিজ্য ও যোগাযোগ বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে দুই দেশকে আরও ঘনিষ্ঠ করার কাজ ভারত জারি রাখবে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, কোনো দেশ আদানি গোষ্ঠীর অবস্থা সম্পর্কে ভারতের কাছে জানতে চেয়েছে কি না, তার জানা নেই। তেমন কোনো আগ্রহ কেউ প্রকাশ করে থাকলে তার উত্তর সংশ্লিষ্ট দপ্তরের জানা থাকবে।

অরিন্দম বাগচি বলেন, জি২০ দেশগুলোর কাছে ভারতকে তুলে ধরার মতো বহু বিষয় রয়েছে। আদানি বিতর্ক ওই সম্মেলনে কোনো ছায়া ফেলবে না।

নিউজনাউ/আরএইচআর/২০২৩

X