alo
ঢাকা, শুক্রবার, মার্চ ৩১, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

দৃষ্টিনন্দন 'স্বপ্নদ্বীপ রিসোর্ট', নজর কেড়েছে বিদেশিদের​​​​​​​

প্রকাশিত: ০৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩, ০৩:০০ পিএম

দৃষ্টিনন্দন 'স্বপ্নদ্বীপ রিসোর্ট', নজর কেড়েছে বিদেশিদের​​​​​​​
alo

পাবনা প্রতিনিধি: পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার একদিকে প্রবাহমান পদ্মা নদী। তার উপর দিয়ে ঐতিহ্যবাহী হার্ডিঞ্জ রেলসেতু আর লালনশাহ সেতু মিলে জোড়া সেতুর নান্দনিক সৌন্দর্য। পাশে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, এই প্রকল্প ঘিরে এই উপজেলায় একাংশ যে রাশিয়ার একটি অংশে পরিনত হয়েছে। 

এ উপজেলারই মধ্যবর্তী স্থানে গড়ে উঠেছে নানা সুযোগ সুবিধা সমৃদ্ধ দৃষ্টিনন্দন বিনোদন কেন্দ্র ‘স্বপ্নদ্বীপ রিসোর্ট’।

বিদেশীদের চিত্ত বিনোদন, আবাসন, মনোমুগ্ধকর অবসর সময় কাটানোর অন্যতম প্রতিষ্ঠান হিসেবে গত কয়েক বছরেই সবার দৃষ্টি কেড়েছে 'স্বপ্নদ্বীপ' রিসোর্ট। শুধু ভিনদেশীদের কাছেই না দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিন নানা বয়সী নানা মানুষের পদচারনায় মুখর হয়ে উঠছে এই নান্দনিক রিসোর্টটি। 

পাবনা জেলা শহর থেকে মাত্র ২৪ কিলোমিটার আর ঈশ্বরদী উপজেলা সদর থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটারের দুরত্বে অবস্থিত এই রিসোর্ট। ঈশ্বরদীর উল্লেখ্যযোগ্য সকল স্থান দর্শনেরর জন্য রিসোর্ট থেকে রয়েছে সুন্দর ও আরামদায়ক যাতায়াত ব্যবস্থা।

No description available.
রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রিক বিশাল এই কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়নে রাশিয়ান, বেলারুশ, উজবেকিস্তানসহ কয়েকটি দেশের সহস্রাধিক নাগরিক কর্মরত রয়েছেন। রূপপুর গ্রীনসিটি, রাশিয়ান পল্লীর পাশাপাশি পাবনার কয়েকটি রিসোর্ট ও ভিআইপি আবাসিক হোটেলে অবস্থান করছেন তারা। তন্মধ্যে তাদের দৃষ্টি কেড়েছে স্বপ্নদ্বীপ রিসোর্ট। 

খাইরুল গ্রুপ অব কোম্পানীর চেয়ারম্যান আলহাজ্ব খাইরুল ইসলাম ২০২০ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি স্বপ্নদ্বীপ রিসোর্টের যাত্রা শুরু করেন। ১০ বিঘা জমির উপর গড়ে তুলেছেন নান্দনিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই বিনোদনসহ রিসোর্টটি। দেশি বিদেশি বিভিন্ন নামিদামি হোটেল, রেস্টুরেন্ট ও রিসোর্টের সুযোগ সুবিধা এই রিসোর্টেও সন্নিবেশ করতে কর্মযজ্ঞ চলমান রয়েছে।

স্বপ্নদ্বীপ রিসোর্টের প্রবেশ মুখেই রয়েছে নান্দনিক কারুকার্য। ভেতরে ঢুকতেই বালি সিমেন্টের তৈরি জাতীয় ফল কাঠাল, নান্দনিক ও শৈল্পিক আল্পনা, সুবিশাল দাবার কোট দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করে। প্রথম দর্শনেই নানা প্রজাতির রং বেরংয়ের বাহারী ফুল আপনার নজর কাড়বে। 

No description available.বিনোদন, অবসর সময় কাটানো, সাঁতার কাটা, সুইমিংসহ নানা সুযোগ সুবিধার পৃথক ও নিরাপদ ব্যবস্থা। সুইমিংপুলে যেতে যেতে লাল-সবুজের বাসরলতা ফুলের ছোঁয়া আপনাকে নিয়ে যাবে রোমাঞ্চকর এক জগতে। পাথর দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বাঘ, জিরাপ, উট পাখি, পরি, পাহাড়ি ঝর্ণা, ফুলের লাভ রিয়াক্ট, পুষ্পকুঞ্জ, গেমিং জোন। গোল পৃথিবীর উপর বসে আছে জাতীয় পাখি দোয়েল। সিংহ মামা যেন হাঁক ডাক করছে। উড়ে যায় শঙ্ক চিল। ভালোবাসার মূর্ত প্রতীক নারী-পুরুষের প্রতিকৃতি। জলপরি জল ছড়ানো, গ্রামীণ নারীদের কলসি কাঁখে অসাধারণ ও মনোমুগ্ধকর শৈল্পিক চিত্রায়ণ, শিশুদের পড়ামুখি করতে কার্টুনের বইপড়া, গিটার হাতে গিরারিষ্ট, শিশুদের গেমিং জোনে নানা রাইড।

সবমিলিয়ে সবার মনকে সহজেই আকৃষ্ট করবে। সুসজ্জিত আবাসিকে রাত্রি যাপনের রয়েছে সুন্দর ব্যবস্থা। বুফে রেস্টুরেন্ট এ পাওয়া যাবে নানা রকমের বিভিন্ন স্বাদের দেশি-বিদেশী খাবার। নান্দনিক পার্কের মধ্যে রয়েছে হানিসুই রাইড, সোয়ান রাইড, কিডস জোন, সুইমিং পুল, পিকনিক স্পট।

স্বপ্নদ্বীপ রিসোর্টের স্বপ্নদ্রষ্টা খাইরুল গ্রুপ অব কোম্পানীর চেয়ারম্যান আলহাজ্ব খাইরুল ইসলাম জানান, অভিজ্ঞ ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সেফ দিয়ে সুস্বাদু ও স্বাস্থ্য সম্মত খাবার প্রস্তুত এবং প্রশিক্ষিত কর্মী দিয়ে খাবার পরিবেশন করা হয়। বাংলা, ইন্ডিয়ান, রাশিয়ান, কন্টিনেন্টাল ও চাইনিজের সু-ব্যবস্থা রয়েছে। সহস্রাধিক মানুষ একসঙ্গে এই রিসোর্ট কাম পার্কে তাদের ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক অনুষ্ঠান করতে পারেন।      

তিনি আরও বলেন, দুই বছরের ব্যবধানে যতটুকু করতে পেরেছি তাতেই ব্যাপক সাড়া মিলছে। দেশে আমার এই রিসোর্টের সুনাম ছড়িয়েছে। আমি বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেছি। বিভিন্ন দেশের অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধা দেখে এসে দর্শনার্থীদের জন্য সেটি করার চেষ্টা করছি। এখনও অনেক কাজ চলছে। তবে বিদেশিরা এখানে বেশি আসেন। তারা খুব করে চাইছেন একটি বার স্থাপন করতে। লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছি। আমি আশাবাদী বিনোদনপ্রেমীদের জন্য দেশের প্রথম সারির একটি রিসোর্ট করতে পারবো।

No description available.স্বপ্নদ্বীপ রিসোর্ট পরিদর্শনকালে কথা হয় রাশিয়ান, উজবেকিস্তান, বেলারুশসহ কয়েকটি দেশের নাগরিকদের সঙ্গে। রাশিয়ান নাগরিক আলেক্সি বলেন, বাংলাদেশে এসে ভেবেছিলাম আরামদায়ক অবসর সময় কাটানো এবং রাত্রি যাপনে বিঘ্নিত হতে হবে। কিন্তু আমাদের সকল চাহিদা প্রায় পূর্ণ করেছে স্বপ্নদ্বীপ রিসোর্ট। 

রাশিয়ান নারী নাগরিক নাতালিয়া বলেন, বার ও স্প্যা ছাড়া সব সুবিধা রয়েছে। ভালো লাগছে অবসর সময় কাটাতে পারছি। এতো সুন্দর পরিবেশ সেটা ভাবাই যায় না।

উজবেকিস্তান নাগরিক আরতুন বলেন, আমরা প্রথমে এই রিসোর্টে থাকতাম। এখন রূপপুর গ্রীনসিটিতে থাকি। কিন্তু আনন্দ, বিনোদন, অবসর সময় কাটাতে এখানে আসি। সব ভালো লাগে। কিন্তু স্প্যা আর বার না থাকায় কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।

রিসোর্টে আসা কয়েকটি দেশের নাগরিকদের তাদের সংস্কৃতি অনুসারে এখানের কিছু অনুশাসনে তারা আটকে আছে। 

স্বপ্নদ্বীপ রিসোর্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুনেম তাজওয়ার অহিন বলেন, এই রিসোর্ট একটি থ্রি স্টার হোটেল। এখানে সুন্দর ও বিলাস বহুল আবাসিক কক্ষ রয়েছে। রুপপুর পারমানবিক প্রকল্পে ও ইপিজেডে কর্মরত বিদেশি নাগরিক সহ ভ্রমণ পিপাসু অনেক মানুষ এখানে বেড়াতে আসেন।

নিউজনাউ/কেআই/২০২৩
 

X